Categories
International

স্টকহোম বাংলাদেশ দূতাবাসে ৭ই মার্চ উদযাপন

স্টকহোম বাংলাদেশ দূতাবাসে ৭ই মার্চ উদযাপন

রবিবার (৭ মার্চ) যথাযোগ্য মর্যাদা ও ভাবগাম্ভীর্যের মধ্য দিয়ে সুইডেনের বাংলাদেশ দূতাবাসে ঐতিহাসিক ৭ই মার্চ উদযাপন করা হয়েছে। ৭ মার্চ সকালে দেশটির রাজধানী স্টকহোমে বাংলাদেশ দূতাবাস প্রাঙ্গণে জাতীয় পতাকা উত্তোলনের মধ্য দিয়ে দিবসের কার্যক্রম শুরু হয়।

বিকালে অনলাইনে জুম প্লাটফর্মে ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণের তাৎপর্য নিয়ে এক আলোচনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। দূতাবাসের প্রথম সচিব আমরিন জাহানের সঞ্চালনায় ও রাষ্ট্রদূত মো. নাজমূল ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে মূল বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বীর মুক্তিযোদ্ধা লেফটেন্যান্ট কর্নেল (অব.) কাজী সাজ্জাদ আলী জহির, বীর প্রতিক। সুইডেন, নরওয়ে এবং ফিনল্যান্ডে অবস্থানরত বাংলাদেশি কমিউনিটির সদস্যবৃন্দ অনলাইনে এবং দূতাবাসের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা দূতাবাস প্রাঙ্গন থেকে যোগদান করেন।

অনুষ্ঠানের শুরুতে পবিত্র ধর্মগ্রন্থ থেকে পাঠ শেষে দূতাবাসের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ও অনলাইনে অংশগ্রহণকারী অতিথিদের সমবেত শুদ্ধ স্বরে জাতীয় সংগীত পরিবেশন করা হয়। জাতীয় সংগীত পরিবেশনের পর রাষ্ট্রদূত মো. নাজমুল ইসলামের নেতৃত্বে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয়। দিবসটি উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি এবং প্রধানমন্ত্রী কর্তৃক প্রদত্ত বাণী পাঠ করেন দূতাবাস কর্মকর্তাগণ। অনুষ্ঠানে বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণ ছাড়াও এ দিবসকে কেন্দ্র করে একটি বিশেষ প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শন করা হয়।

অনুষ্ঠানের মূল বক্তা বীর মুক্তিযোদ্ধা লেফটেন্যান্ট কর্নেল (অব.) কাজী সাজ্জাদ আলী জহির, বীর প্রতিক ‘বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশ’ বিষয়ে বক্তব্য প্রদান করেন। তিনি বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণের পেছনের ইতিহাস বর্ণনা করে ব্যক্তিগত বিভিন্ন অভিজ্ঞতার আলোকে তিনি মুক্তিযুদ্ধে বঙ্গবন্ধুর কালজয়ী অবদান তুলে ধরেন। তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুর এই একটি বক্তৃতা একটি জাতিকে স্বাধীনতা সংগ্রামে উজ্জীবিত করেছে। এই ভাষণেই স্বাধীনতা সংগ্রামের পুরো দিক নির্দেশনা ছিল। একটি ভাষণের এই অর্জন এবং গুণাবলী বিশ্বের ইতিহাসে অত্যন্ত দুর্লভ। বিশ্বজনীনতা এবং মানবিক গুণের কারণেই বঙ্গবন্ধুর ভাষণ ইউনেস্কোর বিশ্ব ঐতিহ্যের অংশ হয়েছে।

বিশ্বের অন্যতম শ্রেষ্ঠ ভাষণ হিসেবে আখ্যায়িত করে তিনি বলেন, এই ভাষণ শুধু মুক্তিকামী বাঙালিদেরই নয় বরং সারা বিশ্বের হতদরিদ্র এবং অত্যাচারিত মানুষদেরও ডাক দিয়েছিলেন এই ভাষণের মাধ্যমে। এরপর অনলাইনে উপস্থিত সুইডেন, নরওয়ে এবং ফিনল্যান্ডে অবস্থানরত প্রবাসী বাংলাদেশিদের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণে উন্মুক্ত আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়। আলোচনায় বক্তারা ঐতিহাসিক ৭ই মার্চের ভাষণের পটভূমির পাশাপাশি মহান মুক্তিযুদ্ধ এবং আন্তর্জাতিক পর্যায়ে এই ভাষণের স্বীকৃতির তাৎপর্যের ওপর গুরুত্বপূর্ণ বক্তব্য দেন।

এ সময় বক্তারা বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ৭ই মার্চে যে ভাষণ দিয়েছিলেন তার মাধ্যমে তিনি বাংলাদেশের অতীত, বর্তমান ও ভবিষ্যতের প্রেক্ষাপটকে বিবেচনা করে বাঙালি জাতির মুক্তির পথ দেখিয়েছিলেন। একটি ভাষণ একটি দেশের জন্ম দেয়। একটি রাজনৈতিক ভাষণ কীভাবে একটি জাতির মুক্তির দিশা দিতে পারে এবং সেইসঙ্গে সাংস্কৃতিক চেতনাকে সমৃদ্ধ করে নতুন পথের সন্ধান দিতে পারে- বঙ্গবন্ধুর ৭ই মার্চের ভাষণ তার জ্বলন্ত প্রমাণ। তারা আহবান করে বঙ্গবন্ধুর ভাষণকে উপজীব্য করে এবং বুকে ধারণ করে তরুণ প্রজন্মকে সামনে এগিয়ে যেতে হবে।

রাষ্ট্রদূত মো. নাজমুল ইসলাম তাঁর বক্তব্যে ঐতিহাসিক ৭ই মার্চের গুরুত্ব ও তাৎপর্য তুলে ধরেন। তিনি বক্তব্যের শুরুতেই গভীর শ্রদ্ধার সঙ্গে স্বাধীন বাংলাদেশের মহান স্থপতি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে স্মরণ করেন। রাষ্ট্রদূত তাঁর বক্তব্যে বলেন, বঙ্গবন্ধু আমাদের হৃদয়ের অনুভূতির নাম, হৃদয়ের অন্তঃস্থল থেকেই আমরা তাঁকে স্মরণ করি। ৫০ বছর পেরিয়ে গেলেও বঙ্গবন্ধুর দেওয়া ৭ই মার্চের ভাষনের আবেদন সার্বজনীন। ঐতিহাসিক ৭ মার্চের এই ভাষণ ১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধে সমগ্র বাঙালি জাতিকে ঐক্যবদ্ধ করেছিল এবং মুক্তির মন্ত্রে উজ্জীবিত বাঙালির জন্য প্রেরণার উৎস হয়ে উঠেছিল। তিনি সকলের, সুস্থতা, শান্তি ও সমৃদ্ধি কামনা করে অনুষ্ঠানের সমাপ্তি ঘোষণা করেন।

By 하이테크전문가

건강에 대한 유익한 정보들을 나누어 드립니다.